২০-এপ্রিল-২০২৪
২০-এপ্রিল-২০২৪
Logo
কৃষি

খালের বুকে রাস্তা নির্মাণ,কৃষি জমিতে জলাদ্বতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিতঃ ২০২২-০৮-১৭ ১৮:২০:৫৩
...

মানিকগঞ্জের ঘিওরের নালী ইউনিয়নে সরকারি খালের উপর রাস্তা নির্মাণ করায় জলাদ্বতায় পড়েছে আড়াই হাজার বিঘা কৃষি জমি জলাদ্বতা নিরসনে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন

জানা গেছে,ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের মাশাইল এলাকার প্রবাহমান খালের উপর দিয়ে রাস্তা নির্মান করায় প্রায় ত্রিশ বছর ধরে ১০ গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার বিঘা কৃষি জমি জলাবদ্বতায় পড়েছে এতে কৃষকদের বছরে প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতি হচ্ছে

বন্যা বা বৃষ্টির পানি প্রবেশ নিস্কাশনের ব্যাবস্থা না থাকায় তিন ফসলী জমি এক ফসলী জমিতে পরিনত হয়েছে এতে স্থানীয় কৃষকেরা সময় মত কৃষি জমি চাষ না করতে পেরে লোকশানে পড়ছে এক সময় প্রতিবছর স্থানীয়রা নিজ জমিতে বোরো ধান সরিষাসহ বিভিন্ন রকমের ফসল আবাদ করে বেশ লাভবান হতো জলাবদ্বতার কারণে বর্তমানে ওই জমিতে রবি ফসল আবাদ না করতে পেরে চরমভাবে কৃষিখাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে স্থানীয় কৃষকেরা এমতাস্থায় খালের মুখের বাঁধ অপসারন করে দ্রুত কালভার্ট নির্মাণের দাবী এলাকাবাসীর

ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, উপজেলার নালী ইউনিয়নের মাশাইল গ্রামের  সাবেক মেম্বার চাঁন আলী বেপারী বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ বাড়ি-ঘর নির্মান করেছেন আবার তার ইন্দোনেই  কৃষি জমির পানি নিস্কাশনের মুখ বন্ধ করে খালের পাড় ঘেঁষে সরকারী রাস্তা তৈরী করে  এখন খালের জায়গা তার পুকুরে চাঁন আলী বেপারীর পেশী শাক্তির কাছে গ্রামের মানুষ অসহায়


মাশাইল গ্রামের কালীপদ দাস,শুশীল শীল সিরাজুলসহ অনেকেই বলেন, আগে মাশাইল দপচকের পানি বের হত সাবেক মেম্বার চাঁন আলী বেপারীর বাড়ি পাশে খাল দিয়ে এই খাল দিয়ে আমরা নৌকা চালিয়ে চকে যেতাম খালের মুখ বন্ধ করে রাস্তা চাঁন আলী বেপারী বাড়ি ঘর নির্মান করার কারনে চকের পানি ঢুকতেও পারে না এবং বের হতেও পরে না চকের পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকার নতুন করে ব্রিজ নির্মাণ করলেও সেখান দিয়ে পানি বের হয়না

 সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , উপজেলার নালী ইউনিয়নের মাশাইল মধ্যপাড়া নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় জমিগুলো পানির নিচে ডুবে থাকে জমির পানি প্রবেশদার নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামের কৃষকেরা তাদের জমিতে ফসল উৎপাদন করতে পাড়ছে না এর মাঝেও অন্যের কাছ থেকে ধার দেনা মনের আশা নিয়ে কষ্ট করে ওই সব জমিতে ধানের চারা রোপন করলেও রোপনকৃত চারাগুলো পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে তা পঁচে যায় এছাড়া বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই চকের ভিতরে পানি ঢুকে দীর্ঘ সময় ধরে পানির নিচে তলিয়ে থাকে জমিগুলো এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে দশ গ্রামের  বাসিন্দরা স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ধর্না দিয়ে মানব বন্ধন করেও এখনো মেলেনি কোন সমাধানমাশাইল দক্ষিন পাড়া, মাশাইল নতুন পাড়া, মাশাইল পূর্বপাড়া, উভাজানী, গাঙ্গডুবি, দিয়াল, নিমতা, বানজান নালী গ্রামসহ  আশেপাশে প্রায় আড়াই হাজার বিঘা কৃষি জমি রয়েছে

 

বিষয়ে নালী ইউনিয়নের মাশাইল গ্রামের সাবেক মেম্বার চাঁন আলী ব্যাপারী বলেন, আগের উপজেলা চেয়ারম্যান খালের পাশ দিয়ে রাস্তা তৈরী করেছে আমি যদি খালের মুখ বন্ধ করে ঘরবাড়ি নির্মান করে থাকি তাহলে আপনারা খাল মাপ দিয়ে যদি আমার কাছে জায়গা পান তাহলে বাড়ি ঘর উঠিয়ে নিব

মাশাইল নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার আসলাম বলেন, মাশাইল দপচকের জমি জলাবদ্ধতার কারনে ঠিকমত জমি চাষ করতে পারে না এলাকার লোকজন বিষয়ে এলাকার লোকজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ বিপুল হোসেন বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে উন্নয়ন মুলক প্রকল্পের মাধ্যমে চকের পানি নিস্কাশনের ব্যাবস্থা করতে হবে যেহেতু আড়াই হাজার বিঘা জমি জলাবদ্ধতার কারনে এক ফসল উৎপাদন হয় যদি পানি নিস্কাশনের ব্যাবস্থা করে দুফসলী, তিন ফসলী জমিতে রুপান্তর করা যায় তাহলে কৃষকদের দুর্ভোগ কমবে এবং খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে

এপ্রসঙ্গে নালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মধু বলেন, আমার জানা মতে স্থানীয় কৃষকেরা ত্রিশ বছর যাবত জলাবদ্বতার কারণে সময় মত রবি ফসল আবাদ করতে পারছে না আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে খালের উপরে কালভার্ট নির্মাণ করে জলাবদ্বতা নিরসন করে দিব আর যদি কোন ব্যক্তি সরকারি খাল দখল করে থাকে তাহলে সরকারি ভাবে সার্ভে করে সরকারি সম্পত্তি উদ্বার করা হবে

 

ব্যাপারেও ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অথবা উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দিয়ে দ্রুত পানি প্রবেশ নিস্কাশনের ব্যাবস্থা নেওয়া হবে