২০-এপ্রিল-২০২৪
২০-এপ্রিল-২০২৪
Logo
ক্রিকেট

ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিতঃ ২০২২-০৭-১৭ ১১:৫৮:৪৩
...

প্রথম দুই ওয়ানডেতে পাত্তাই না পেলেও শেষটিতে এসে কিছুটা লড়াই করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সামান্য সংগ্রহ ১৭৮ রান নিয়েও লড়লো ৪৯তম ওভার পর্যন্ত। কিন্তু হিসেবি ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশের সামনে সেই লড়াই টিকলো না। আরও একবার ওয়ানডে ফরম্যাটে টাইগারদের কাছে পর্যদুস্ত হলো ক্যারিবীয়রা।

গায়ানায় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪ উইকেট আর ৯ বল হাতে রেখে হারিয়েছে তামিম ইকবালের দল। এতে করে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে তারা।

টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি সিরিজে - ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে এসে যেন তার শক্ত প্রতিশোধ নিলো। স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবাল টাইগাররা।

 এবারও বোলাররাই অর্ধেক কাজ সেরে রেখেছিলেন। বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ছিল ১৭৯ রানের। আরও একবার হেসেখেলেই জিতবে টাইগাররা, মনে হচ্ছিল শুরুতে।  উইকেটে ছিল বাংলাদেশের রান ছিল ৯৬। তবে গায়ানার উইকেট বলে কথা! সেখান থেকে আর ২০ রান যোগ করতে আরও উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা। হঠাৎ লড়াইয়ে ফেরে নিকোলাস পুরানের দল।

 এরপর মাহমুদউল্লাহ আর নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে আবারও স্বস্তি ফেরে টাইগার শিবিরে। ৩৭ বলে তারা যোগ করেন ৩১ রান। মাহমুদউল্লাহ খেলছিলেন ধীরগতিতে।

শেষ পর্যন্ত তাকে ওয়াইড বলে বোকা বানিয়েছেন নিকোলাস পুরান। উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে আসলে স্টাম্পিং হন ৬১ বলে ২৬ করা মাহমুদউল্লাহ। ১৪৭ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ, আবারও আশায় বুক বাঁধে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই আশায় গুঁড়েবালি দিয়েছেন সোহান আর মেহেদি হাসান মিরাজ। ঠান্ডা মাথায় দেখেশুনে ম্যাচ বের করে নিয়েছেন এই যুগল। ৫৭ বলে ৩২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন তারা। সোহান ৩৮ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩২ আর মিরাজ ৩৫ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

রান তাড়ায় নেমে ২০ রানে ভেঙেছিল বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। এর মধ্যে সিংহভাগ রানই আসে তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে। ১১ বল খেলে প্রথম রানের খাতা খোলা শান্ত দুই বল পরই আলজেরি জোসেফের ডেলিভারিতে এজ হয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মাত্র ১ রানেই।

শান্তকে হারানোর পর লিটন দাসের সঙ্গে ৫০ রানের আরেকটি জুটি (৬২ বলে) গড়েন তামিম। টাইগার দলপতি খেলছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। তবে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে থামতে হয়েছে তাকে। ৫২ বলে বাউন্ডারিতে ইনিংস সাজিয়ে ভুল শট খেলে বসেন তামিম। গোদাকেশ মোতিকে সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা পড়েন বাঁহাতি এই ওপেনার।

 তামিম ফিরলেও আরও একবার দারুণ এক ইনিংস বেরিয়ে এসেছে লিটন দাসে উইলো থেকে। ডানহাতি এই ব্যাটার তুলে নেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ওয়ানডে ফিফটি। যদিও ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটন। গোদাকেশ মোতির দারুণ এক ফিরতি ক্যাচে সাজঘরের পথ ধরেন মারকুটে এই ব্যাটার। ৬৫ বলে গড়া তার ৫০ রানের ইনিংসটি ছিল বাউন্ডারি আর ছক্কায় সাজানো। এর ঠিক এক বল পরই আরেক ব্যাটার আফিফ হোসেনকেও () বোল্ড করে বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দেন মোতি। ২৫তম ওভারে ডাবল উইকেট মেইডেন নেন ক্যারিবীয় বাঁহাতি এই স্পিনার।

 মোসাদ্দেক হোসেন খেলছিলেন দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। টানা দুই ওভারে একটি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে দেন ভালো কিছুর ইঙ্গিত। কিন্তু ১৪ রানেই থামতে হয়েছে ডানহাতি এই ব্যাটারকেও।

 দারুণ বোলিং করা মোতিকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে লংঅফ ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়েন মোসাদ্দেক। ১১৬ রানে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত সেই চাপ কাটিয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে টাইগাররা।

ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন গোদাকেশ মোতি। ১০ ওভারে মাত্র ২৩ রানে তিনি নেন ৪টি উইকেট।


এর আগে তাইজুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৭৮ রানেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১০ ওভারে ২৮ রান খরচ করে টাইগার দলের বাঁহাতি স্পিনার একাই নেন উইকেট।

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে সিরিজে তৃতীয়বারের মতো টস জিতেছেন তামিম ইকবাল। আগের দুই ম্যাচের মতো এবারও আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বোলিং করতে নেমে প্রথম ওভার তুলে দেওয়া হয় আগের ম্যাচের সেরা নাসুম আহমেদের হাতে।

প্রথম ওভারে রান খরচ করেন নাসুম। তবু তাকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেন তামিম। দ্বিতীয় ওভার মোস্তাফিজকে দিয়ে করানোর পর বল তুলে দেওয়া হয় তাইজুলের হাতে। নিজের প্রথম বলেই দারুণ এক টার্নিং ডেলিভারিতে ফ্রন্ট ফুট ডিফেন্স করা কিংকে বোল্ড করেন তাইজুল।